ঢাকা, ৮ জুলাই ২০২৫, মঙ্গলবার

দেশের ব্যাংক ব্যবস্থার কেচ্ছা-কাহিনী

জাতীয় | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ৩:০১

অনলাইন ডেস্ক


প্রসঙ্গ বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। এই ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তথা সামগ্রিক উন্নয়নের অগ্রগতি। আজ থেকে ৫৩ বছর আগে সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের ব্যাংকিং কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছিল হাতেগোনা কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক নিয়ে। পাকিস্তানিদের ফেলে যাওয়া ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, হাবিব ব্যাংক, ইউনাইটেড ব্যাংক, ইস্টার্ন মার্কেন্টাইল ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংকিং কর্পোরেশনসহ আরো কিছু ব্যাংককে রাষ্টীয়করণের মধ্য দিয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের ব্যাংকিং-এর যাত্রা শুরু। অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে দেশের বিরাজমান ব্যাংকিং ব্যাবস্থার আলোচনায় উঠে এসেছে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করার বিষয়টি। কিন্তু কী কারণে এই অবস্থার উদ্ভব তা একমাত্র বিশেষজ্ঞরাই ভালো বলতে পারবেন। স্বাধীনতার পর ক্রমান্বয়ে ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার বিকাশের কারণে মাত্র ১২ বছরের ব্যবধানে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকের সংযোজন ঘটে দক্ষতার সাথেই।অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি দেশ এমন এক সময় অতিক্রান্ত করে এসেছে যখন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চেয়ে বেসরকারি ব্যাংকের ভিত অনেক শক্ত ও মজবুত ছিল। সরকারিভাবে ভর্তুকি দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্তব্যাংককে সচল রাখতে হয়েছে বছরের পর বছর টানা লোকশান দিয়ে। তখন উচ্চ কাঠামোর বেতন ভাতা পরিশোধের পরও বেসরকারি ব্যাংকের মুনাফা ছিল অবিশ্বাস্য ও ধারণাতীত। সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশে ১৯৭১ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত খুব বেশি সময় নয়, মাত্র ১২ বছর। ১৯৮৩ সালে উত্তরা ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংককে বিরাষ্ট্রীকরণের মধ্য দিয়ে দেশের রেসরকারি ব্যাংকের কর্মকাণ্ড শুরু। বলা যায়, বেসরকারি ব্যাংকের সফল অগ্রযাত্রা যা ছিল রীতিমত বিস্ময়কর। এই পথ ধরেই শুরু হয় ইসলামী ব্যাংক, আরব বাংলাদেশ ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইউসিবিএলসহ আরো অনেক ব্যাংকের যাত্রা। উদ্বোধনের পর এই সব ব্যাংক যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল তা অনেকে ধারণা করতে পারেননি। এই ব্যাংকগুলোর কর্মকাণ্ডের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো রীতিমত দুশ্চিন্তায় ও দক্ষ ব্যাংকারের সংকটের মুখেও পতিত হয়। বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর শীর্ষ ও মধ্যম পর্যায়ের দক্ষ কর্মকর্তাদের লোভনীয় অফার দিয়ে বেসরকারি ব্যাংকসমূহ নিয়ে যায়, তা ছিল কল্পনাতীত। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের তখনকার বিদ্যমান বেতনকাঠামোর চেয়ে ৪/৫ গুণ বা ক্ষেত্রবিশেষে আরো বেশি অংকের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে দক্ষকর্মী নিয়োগ করেছিল তাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে জনবল সংকটের উপক্রম হয়। সেই সময় রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের নিরাপদ চাকরির নিশ্চয়তাকে উপেক্ষা করে দলে দলে বেসরকারি ব্যাংকে যোগদান করেছেন অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই।

সম্পাদক ও প্রকাশক: মামুন বিন আবদুল মান্নান

৫ম তলা, স্কাইলার্ক পয়েন্ট ভবন , বিজয়নগর, ঢাকা ১২১২।
ইমেইল: bangladeshtimeline007@gmail.com