
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতিসংঘ বিজয়
জাতীয় | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৬:৫১
অনলাইন ডেস্ক
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী বিশ্বনন্দিত ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। দ্বিতীয় স্বাধীনতা লাভ করেছে বাংলাদেশ। জাতীয় জীবনে সৃষ্ট গভীর সংকট ও নবতর প্রত্যাশার সন্ধিক্ষণে রাষ্ট্রের দায়িত্বভার বর্তেছে তার উপর। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রথমবারের মতো তিনি এসেছেন বিদেশ সফরে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক পৌঁছেছেন তিনি। এই বিশ্বনেতা বাংলাদেশের ৫৯ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রাথমিকভাবে প্রকাশ করা হয় ৭ জন সফর সঙ্গীর একটি তালিকা। পরবর্তীতে জাতিসংঘে তার কর্মসূচির কলেবর বৃদ্ধি পেলে একদিন এগিয়ে আনা হয় নির্ধারিত সফরের তারিখ। বাড়ানো হয় কর্মসূচি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সংখ্যা। জানা গেছে, প্রতিনিধি দলের মোট সংখ্যার প্রায় অর্ধেকই হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা ও প্রটোকলে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ।
ড. ইউনূস নিউইয়র্ক এসে পৌঁছানোর পরদিন সকাল থেকেই একের পর এক বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও বৈঠকে বিরামহীনভাবে যোগদান করছেন। প্রথম দিনেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে বৈঠক করেছেন। দুই নেতার মাঝে প্রায় আধা ঘণ্টার এই বৈঠক ছিলো ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন। সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিতর্ক শুরুর প্রথম দিন প্রথা অনুযায়ী স্বাগত ভাষণ দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। এ সময় তিনি সর্বোচ্চ দু’দিন অবস্থান করেন নিউইয়র্কে। তার ভাষণের পরপর হাঁটা পথে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানের সাথে অনির্ধারিত দেখা হয়। সেলফিও তোলেন অনেকে। কিন্তু পূর্ব নির্ধারিত ছাড়া আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠকে মিলিত হন না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। ড. ইউনূসের সঙ্গে জো বাইডেনের যে আলোচনা হয়েছে, বিগত তিন দশকের মধ্যে এটি নজিরবিহীন এক ঘটনা। সাধারণত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অন্য দেশের সরকার প্রধানের সাক্ষাৎ ঘটে লবিতে। সেখানে তিনি কারো সাথে কোনো বৈঠকে মিলিত হন না। সেজন্য জাতিসংঘ সদর দফতরে বাইডেন-ইউনূস বৈঠক ছিল ব্যতিক্রমী ঘটনা। এই বৈঠকে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন জো বাইডেন। ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের। সবচেয়ে বড় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বৈঠকটির অন্তরঙ্গতা। ছবি কথা বলে এর সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে এবার। জো বাইডেন ড. ইউনূসকে জড়িয়ে ধরে বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন বিরল আন্তরিকতার। এর মধ্যেই নিহিত রয়েছে এই সফরের সার্থকতা।