
আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা জাহিদের নয়া ফন্দি
রাজনীতি | ১৯ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ৯:০১
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাগেরহাট-৪ (মোড়েলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি বদিউজ্জামান সোহাগের ছত্রছায়ায় মোড়েলগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন গ্রিস আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। সোহাগের নির্বাচনী প্রচারণায় ৪২টি তোরণ নির্মাণ করেছিলেন তিনি। মোড়েলগঞ্জে সোহাগের বিভিন্ন জনসভায় নোকার পক্ষে ভোট চেয়ে বক্তব্যও রেখেছিলেন তিনি। এমন কি সোহাগের প্রায় সব নির্বাচনী প্রচারণার অর্থের জোগান দিয়েছিলেন জাহিদ। তবে ৫ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভোল পাল্টে ফেলেন জাহিদ। খোলস পাল্টে হয়ে যান সমাজসেবক, কখনো বিএনপি নেতা, কখনো এনসিপি নেতাদের সাথে, কখনো আবার জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সাথে ফটোসেশন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালান। সম্প্রতি তাঁতী দল থেকে বহিষ্কৃত কাজী মনিরের সঙ্গে আঁতাত করে বিএনপিতে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের বারইখালী ইউনিয়নের এক আওয়ামী পরিবারের সন্তান গ্রীস প্রবাসী জাহিদুল ইসলাম। আপন ভাই নাজমুল হাসান রানা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। এক সময় আওয়ামী লীগের হয়ে মোরেলগঞ্জের আওয়ামী লীগের সকল কর্মসূচীতে সহযোগিতা করতেন জাহিদ। এলাকায় আওয়ামী সরকারের প্রচারণায় অনেক অর্থ ব্যয় করেছেন তিনি। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি বদিউজ্জামান সোহাগের নির্বাচনী প্রচারণায় অর্ধশতাধিক তোরণ নির্মাণ করে আলোচনায় এসেছিলেন গ্রিস আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। মোড়েলগঞ্জে সোহাগের বিভিন্ন জনসভায় নোকার পক্ষে ভোট চেয়ে বক্তব্যও রেখেছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের কর্মী পরিচয়ে পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীদের সঙ্গে ছবি তুলে এলাকায় প্রচার চালাতেন। আপন ছোটভাই নাজমুল হোসেন রানাকে বানিয়েছিলেন বারইখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। সেই আওয়ামী লীগ কর্মী জাহিদ এবার বিএনপিতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছেন। কৌশলে আঁতাত করছেন বিএনপির বহিষ্কৃত নেতাদের সঙ্গে। জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক এমপি বদিউজ্জামান সোহাগের ছত্রছায়ায় মোড়েলগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার করতেন জাহিদ। বদিউজ্জামান সোহাগের নির্বাচনী প্রচারণায় সোহাগের ছবির সঙ্গে নিজের ছবি জুড়ে দিয়ে অর্ধশতাধিক তোরণ নির্মাণ করেছিলেন। সোহাগের একাধিক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রেখে নোকৗর পক্ষে ভোট চেয়েছিলেন। যুবলীগ নেতা ছোটভাইকে দিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতেন। কিন্তু ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর বিপাকে পড়ে যান তিনি। মোড়েলগঞ্জে স্থানীয় এলাকাবাসী স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোর হিসেবে জাহিদের বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছেন। সেজন্য দেশে ফিরলেও ভয়ে এলাকায় যান না জাহিদ। ঢাকায় পাঁচ তারকা হোটেলে থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ফটোসেশন করেন ফেসবুকে প্রচার চালান। সম্প্রতি তাঁতী দল থেকে বহিষ্কৃত এক নেতার সঙ্গে আঁতাত করে বিএনপিতে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছেন। ‘ভয়েস ফর গ্লোবাল’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে একটি সেমিনারের আয়োজন করেছেন জাহিদ। ওই সেমিনারে বিএনপি জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। ওই সেমিনারের দায়িত্ব সাফায়েত হোসেন বাবুকে দেয়া হলেও নেপথ্যে সব আয়োজন করেছেন জাহিদ। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য না। আমি ‘ভয়েস ফর গ্লোবাল’-এর সাথে জড়িত। সে সংগঠনের ব্যানারে আমরা ৫ই ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠকও করেছি। তিনি বলেন, আমার নিজ নামে একটি ফাউন্ডেশন আছে। সে ফাউন্ডেশনের ব্যানারে স্থানীয় সাবেক এমপি এবং ছাত্রলীগ নেতা বদিউজ্জামাল সোহাগকে নিয়ে একটি প্রোগ্রাম করেছিলাম। সেখানে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে বক্তব্য না রাখলে অনেক জনকল্যাণমুখী কাজ আদায় করা যায় না। সরকারের গুনগান না গাইলে কোন কাজ হয় না।